আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন মোড় নিতে চলেছে। শুক্রবার সকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক বিষয়ে আলোচনার সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করছে। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য বিরোধ মেটাতে এই ঘোষণাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীনা মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, “মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার চীনের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “চীনের অবস্থান সুস্পষ্ট। যদি আমরা যুদ্ধ করি, তাহলে শেষ পর্যন্ত লড়াই করব; আর যদি আমরা কথা বলি, দরজা সবসময় খোলা। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তরিক হতে হবে এবং তাদের ভুল অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সেইসঙ্গে একতরফা শুল্ক বাতিল করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
চীনের এই বিবৃতি এসেছে এমন এক সময়, যখন বিশ্বের বিভিন্ন অর্থনীতি এই বাণিজ্য দ্বন্দ্বের কারণে অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত উচ্চ শুল্ক—কিছু কিছু ক্ষেত্রে যা ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে—চীনা রপ্তানিকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতার অভাব তৈরি করছে।
চীনের এই বিবৃতি এমন একদিন পর এসেছে, যখন চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া সংশ্লিষ্ট একটি উইবো অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে চাচ্ছে। তবে বেইজিং সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। উক্ত পোস্টে বলা হয়েছিল, “চীনের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলার দরকার নেই। আলোচনার দৃষ্টিকোণ থেকে, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রকেই বেশি উদ্বিগ্ন হতে হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয় পক্ষই বিভিন্ন সময় আলোচনার ইঙ্গিত দিলেও, তাদের বক্তব্যে বারবার অবস্থান এবং অস্বীকৃতির চক্র দেখা যাচ্ছে। ফলে বাস্তবিক অর্থে আলোচনা কবে শুরু হবে।
বিশ্ব অর্থনীতি যখন মন্দার শঙ্কায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের শীতলতা গলে আলোচনার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়াকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন। তবে সবকিছুর আগে প্রয়োজন পারস্পরিক আস্থার পুনর্গঠন এবং একতরফা পদক্ষেপ পরিহার।