39 C
Dhaka
Saturday, April 20, 2024

ফিলিপাইনে মাংসের দামের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি!

চাকুরির খবর

অনলাইন ডেস্ক: ফিলিপাইনে এখন মাংসের দামের চেয়ে এক কেজি পেঁয়াজের দাম বেশি। দেশের দৈনিক ন্যূনতম মজুরি ছাড়িয়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দাম কিছুটা কমেছে, কিন্তু পেঁয়াজ কেনা এখনো অনেক ফিলিপিনোর জন্য বিলাসিতা।

ফিলিপাইনে পেঁয়াজের সংকটে এখন রেস্তোরাঁয় নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে লেখা, ‘বেরেস্তার সঙ্গে খাবার পরিবেশন করা হয় না’। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গত মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতি কিলোগ্রামে প্রায় ৭০০ পেসো বেড়েছে, যা প্রায় ১৩ ডলারের সমান। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আমাদের গ্রাহকরাও এটা বোঝেন, কারণ এটা শুধু রেস্তোরাঁর বিষয় নয়। এই পেঁয়াজের সংকটে ভুগছে সব পরিবার। ফিলিপিনো রান্নায় পেঁয়াজ একটি অপরিহার্য উপাদান, ঠিক ভারতের মতো।

সেই পেঁয়াজ এখন দেশের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যায়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। গত মাসে ফিলিপিন্সে মূল্যস্ফীতি পৌঁছেছে ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র কৃষি মন্ত্রণালয়কে নিজের হাতে রেখেছেন। তিনি খাদ্যের দাম বৃদ্ধির পরিস্থিতিকে ‘জরুরি অবস্থা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। চলতি মাসের শুরুতে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে লাল ও হলুদ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিলিপাইনের অর্থনীতি মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার শুরু হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেড়েছে, যা ইতোমধ্যে দামকে ঠেলে দিয়েছে। এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ায় পেঁয়াজসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তাতে দাম আরও বেড়েছে।

আইএনজি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ নিকোলাস মাপা জানান, গত আগস্টে খাদ্য সংকটের পূর্বাভাস দিয়েছিল কৃষি বিভাগ। এরপর দুইটি শক্তিশালী ঝড় ফিলিপাইনে আঘাত হানে, ফলে ফসলের যথেষ্ট ক্ষতি হয়।

তিনি বলেন, তাছাড়া অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে চাহিদাও বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ আমরা মুদ্রাস্ফীতির একটি চক্র দেখতে পাই।

মূল্যস্ফীতির এই চক্রের কারণে সেবুতে রাস্তার খাবারের দোকানগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই দোকানগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এই দোকানগুলোতে প্রচুর পেঁয়াজ ও বিভিন্ন সস দিয়ে ভাজা শাকসবজি, মাংস ও সামুদ্রিক খাবার পরিবেশন করা হয়।

এমনই একটি দোকানের মালিক অ্যালেক্স চুয়া তার স্টলে পেঁয়াজ কাটার সময় বলেছিলেন, পেঁয়াজ আমাদের খাবারের নোনতা স্বাদে কিছুটা ঝাঁঝ ও মিষ্টি যোগ করে। তাই পেঁয়াজ আমাদের খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ফিলিপিনোদের এতটাই হতবাক করেছে যে গত এপ্রিলে ইলোইলো শহরের মেয়ে লাইকা বিরে তার বিয়েতে ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজের তোড়া নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন।

স্থানীয় একটি পত্রিকাকে তিনি বলেন, বিয়ের পর ফুলগুলো শুকিয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত ফেলে দেয়া হবে। তাই আমি আমার বরকে জিজ্ঞাসা করলাম আমরা ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারি কি না।

রসিকতার সুরে তার বর বললেন, এমন দিনে ফুলের চেয়ে পেঁয়াজ বেশি বাস্তবসম্মত। তাছাড়া, বিয়ের পরেও আমাদের কাজে লাগবে। বিবিসি জানিয়েছে, ফিলিপাইনের এই পেঁয়াজের দুর্ভিক্ষে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে।

এই মাসের শুরুতে ফিলিপাইন এয়ারলাইন্সের ১০ জন ক্রু সদস্য তাদের লাগেজে প্রায় ৪০ কেজি পেঁয়াজ বহন করার জন্য তদন্ত করা হয়েছিল।

শুল্ক কর্মকর্তারা অবশ্য পরে বলেছিলেন, তারা লাগেজে পেঁয়াজ আনার জন্য ক্রুদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তবে অনুমতি ছাড়া মালামাল না আনতে যাত্রীদের সতর্ক করেছেন তারা। পেঁয়াজের এই সংকট প্রেসিডেন্ট মার্কোসকেও কাপে ফেলেছে।

ফিলিপাইনের এই পেঁয়াজের দুর্ভিক্ষে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে।ফিলিপাইনের এই পেঁয়াজের দুর্ভিক্ষে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে।

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর