30 C
Dhaka
Friday, April 26, 2024

প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ জীবনের এক গল্প

চাকুরির খবর

একটি সাধারণ অ্যাপার্টমেন্ট। বিলাসিতার বালাই নেই। আকারেও ততো বড় নয়। আর এমন এক অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঘটনাচক্রে এল সালভাদরের এক নাগরিক জানলেন, তার পাশের ফ্ল্যাটেই আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সাধারণ ওই অ্যাপার্টমেন্টে একজন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের কথা শুনে অভিভূত হলেন সেই নারী।

ব্যক্তিগত জীবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন সাধারণ জীবনের একটি গল্প শুনিয়েছেন দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়ে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার উপর লেখা একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ওই গল্প শুনিয়ে মোমেন বলেন, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে তার এমন সাধারণ জীবনের গল্পও উঠে আসা উচিত।

মোমেন জানান, ১৯৯৬/১৯৯৭ সালের কথা। প্রথম সন্তানের জন্ম হবে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের, তাকে দেখতে গেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যখন মেয়ের পাশে থাকার জন্য ব্যক্তিগত ওই সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন, মোমেন তখন বস্টনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।

এ কে আব্দুল মোমেন, আমাকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমরা এতো দিন ধরে আসছি, আপনারা খোঁজটোজ নেন না।’ আমি বললাম, আমাদেরকে রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে, ‘আপনাকে বিরক্ত করা যাবে না। আপনি মেয়েকে দেখাশোনার জন্য আসছেন।’ তিনি বললেন, ‘আসেন’। তো আমরা গেলাম সেখানে।

কিন্তু সেই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচে গিয়ে বাঁধল বিপত্তি; কোড নম্বর জানা না থাকায় ঢুকতে পারছিলেন না মোমেন। বারবার চেষ্টা করায় সময় লাগছিল। তাতে প্রবেশমুখে গাড়ির জট লেগে যায়। এক পর্যায়ে পেছেনের গাড়ি থেকে তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন এক নারী। তিনি এল সালভাদরের সেই নাগরিক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি এসে আমাকে বলতেছেন, কী হল? বললাম, আমি তো এখানে কোড নম্বর জানি না। তো সে আমাকে নিজের কোড দিয়ে ঢুকিয়ে দিল। এরপর ওই নারীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য থামলেন মোমেন।

অভিবাদনের পর কুশল বিনিময়ও হয়। তখন সেই নারী জানতে চান, কেন এখানে এসেছেন মোমেন। আমি বললাম, এই রকম একটা অ্যাপার্টমেন্ট, সেখানে যাব। তিনি বললেন, কেন? তুমি কি ওখানে থাকো? বললাম, না। এখানে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আছে। সেখানে যাব।

উত্তর শুনে সেই নারী বিস্মিত হয়েছিলেন। বললেন এখানে প্রধানমন্ত্রী! আমার বাড়ি এল সালভাদরে। আমাদের মন্ত্রীও যখন আসে, তখন রিসোর্টে থাকে, ফাইভ স্টার হোটেলে থাকে। এখানে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী থাকে? নো ওয়ে!

আমি তাকে বললাম, উনি আছেন। তখন তিনি বললেন, যে বাসার কথা বলছ, সেটা আমার উল্টোদিকে। এরপর বললেন, একটা কালো গাড়ি দেখছি এখানে, সম্ভবত সিকিউরিটি গাড়ি।

তখন ওই নারী মোমেনকে বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। মোমেন তাকে শেখ হাসিনার কাছে নিয়ে যান। সেই সাক্ষাতের বিবরণ দিয়ে মোমেন বলেন, সেখানে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে) বললাম যে, আপনাকে একজন দেখতে চায়। প্রধানমন্ত্রী সাথে সাথে তাকে সাক্ষাৎ দিলেন।

সে তো এত ভক্ত হয়ে গেল যে, তৃতীয় বিশ্বের একজন প্রধানমন্ত্রী, যিনি এই রকম সাধারণ বাসায় থাকেন। দুই বেডরুমের। একটাতে তার মেয়ে থাকেন, আরেকটাতে উনি। আরেকটা টিভি রুমের মত ছোট জায়গা। এটা দেখে সে তাজ্জব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওইদিন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে রান্না করেছিলেন। তিনি বললেন, তুমি খেয়ে যাও। এতে সেই নারী আরও অভিভূত হয়ে গেলেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মোমেন বলেন, এটা হলো শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এই গল্পগুলো অনেকে জানে না। এটা তার ব্যক্তি জীবনের গল্প।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক রাজু আলীমের লেখা ‘শেখ হাসিনা সরকার’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিজের জীবনের সেই অভিজ্ঞাতা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, বইয়ের প্রকাশক অনন্যা প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী মনিরুল হক, দি ফ্ল্যাগ গার্ল নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়তা ইফতেখার বক্তব্য রাখেন।

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর