39 C
Dhaka
Saturday, April 20, 2024

নেপথ্যের প্রভাবশালীরা আড়ালেই থেকে যায়

বিডিনিউজ ডেস্ক | ২৬শে জুলাই, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১১ই শ্রাবণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ , বর্ষাকাল, ১৬ই জিলহজ, ১৪৪২ হিজরি

চাকুরির খবর

আওয়ামী লীগে এখন হেলেনা জাহাঙ্গীর নিয়ে তোলপাড় চলছে। হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের একটি উপ-কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন।

এছাড়াও তিনি কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। এই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই তিনি এত বড় বড় পদ কিভাবে পেলেন তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে কারা তাকে আওয়ামী লীগের আনলো। আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ করার আগ পর্যন্ত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে তেমন কোন কথাবার্তা ছিল না।

এমনকি হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন টকশোতে অংশগ্রহণ করতেন। এখন আওয়ামী লীগের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, হেলেনা জাহাঙ্গীর কিভাবে আওয়ামী লীগে এলেন? আর এই প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর নাম এসেছে যার সুপারিশে তিনি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। কিন্তু কুমিল্লা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তিনি হলেন কিভাবে, তার নেপথ্যে কে ছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও রহস্যেই ঢাকা রয়ে গেছে।

হেলেনার ইস্যু শুধু নয়, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুপ্রবেশকারী যখন অপকর্ম করে তখন তাকে নিয়ে শোরগোল হয়, তাকে আইনের আওতায় আনা হয় কিন্তু তার নেপথ্যের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম আড়ালেই থেকে যায়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয় না। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণ করে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে।

এই শুদ্ধি অভিযানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রভাবশালী দুই নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এবং খালেদ গ্রেপ্তার হন ক্যাসিনো বাণিজ্যের অভিযোগে। এই সময় আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযানে অনেক নেতাই পদ হারান। কিন্তু তাদের নেপথ্যে কারা ছিল, কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা আওয়ামী লীগে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিল সে ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান হয়নি।

এই সময়ে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের দুই নেতার বাড়ীতে টাকশাল পাওয়া গিয়েছিল। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু কারা তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিল সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই শুদ্ধি অভিযানের সময়ই জিকে শামীমকে পাওয়া গিয়েছিল।

তিনি যুবলীগের নেতা হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু জিকে শামীমকে আইনের আওতায় আনা হয়েছিল তার পেছনে কে ছিল, কারা তাকে যুবলীগের নেতা বানিয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি।

ওয়েস্টিন হোটেলের কেলেঙ্কারিতে পাপিয়ার নাম আসে। সেই সময় যুব মহিলা লীগের নেত্রী হিসেবে পাপিয়া বিভিন্ন রকম অপকর্ম করতেন। পাপিয়া এখন জেলে। কিন্তু যারা পাপিয়াকে আওয়ামী লীগে এনেছিল, পদ দিয়েছিল তাদের ব্যাপারে কি হলো এই প্রশ্নের উত্তর জানেনা আওয়ামী লীগের তৃণমূল।

শাহেদ আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিত। এই পরিচয়ে শাহেদ বিভিন্ন টকশোতে অংশগ্রহণ করত। করোনার সময় ভুয়া করোনার রিপোর্ট এবং প্রতারণার দায়ে শাহেদ গ্রেপ্তার হয়েছেন। শাহেদ এখন জেলে। কিন্তু শাহেদকে যারা আওয়ামী লীগে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল তাদের কিছুই হয়নি, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে।

আর এভাবেই বিভিন্ন সময়ে অনুপ্রবেশকারীরা যখন কোনো অপকর্ম করে তখন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয় বটে কিন্তু তাদের নেপথ্যে যারা থাকে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। আর এটির কারণেই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

তার মনে করেন যে, যারা এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীদের দলে ঢুকাচ্ছে তাদেরকে প্রথমে চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন যে অনুপ্রবেশকারীদের দলে কোন জায়গা দেওয়া যাবে না এবং অনুপ্রবেশকারীদের যেন নেওয়া না হয়।

কিন্তু তারপরেও তাদের কাদের মদদে পৃষ্ঠপোষকতায় অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকছেন দলের ভেতর সেই প্রশ্নের উত্তরের মীমাংসা খুব জরুরী। তা না হলে আওয়ামী লীগে পাপিয়া শাহেদ হেলেনার মত ব্যক্তিরা ঢুকতেই থাকবে এবং আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে থাকবে। এমনটিই মনে করেন আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর